1. news@panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই : পঞ্চখণ্ড আই
  2. info@www.panchakhandaeye.com : পঞ্চখণ্ড আই :
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন

আবির হারানোর প্রতিশ্রুতি হোক: সেইফ মোটরযান, সেইফ লাইফ

আতাউর রহমান, প্রধান প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত: শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

আতাউর রহমান: একটি মুহূর্ত, একটি বেপরোয়া গতি, আর এক অদৃশ্য ক্ষরণ—আবির নেই। ১১ এপ্রিলের বিকেলটা কেড়ে নিল সব। তার শূন্যতা শুধু পরিবারের ভেতরেই নয়, সমাজের প্রতিটি সচেতন মানুষের হৃদয়েও গভীর দাগ কেটেছে।

মৌলভীবাজারের রাজনগরের ব্রাম্মণ বাজার এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আবিরের মৃত্যু হয়। তার বাড়ি বিয়ানীবাজার পৌরসভার শ্রীধরা গ্রামে। সে ছিল রফিক উদ্দিনের একমাত্র পুত্র। আবিরের মা-বাবা ও দুই বোনকে এখন আর কী সান্ত্বনা বা দেয়ার আছে!

আবিরের শবদেহ সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতাল ঘুরে বাড়ির পথে। সকালবেলায় যে আবির বাড়ির কবরস্থান পরিস্কার করেছিল, বিকেলেই সব শেষ। আবিরের ঠিকানা হয়ে গেল নিজ হাতে পরিস্কার করা কবরস্থানে। তার মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

আবির-এর অকাল মৃত্যু আমাদের শুধু দুঃখ ও ক্ষোভে ডুবিয়ে রাখার জন্য নয়, বরং এর মধ্য দিয়েই শুরু হতে পারে এক নতুন চেতনার যাত্রা—একটি নিরাপদ, সচেতন ও দায়িত্বশীল সড়ক ব্যবস্থার।

সড়ক দুর্ঘটনা যেন আমাদের প্রতিদিনের খবরের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। প্রাণহানি, আহত, কিংবা আজীবন পঙ্গুত্ব—সবকিছুর পেছনে একটি সাধারণ কারণই অধিকাংশ সময় দেখা যায়: বেপরোয়া গতি, সচেতনতার অভাব ও নিরাপত্তা বিধির প্রতি উদাসীনতা।

এই প্রেক্ষাপটে একটি ছোট্ট বার্তা বড় পরিবর্তন আনতে পারে: “সেইফ মোটরযান, সেইফ লাইফ”। অর্থাৎ, যদি যানবাহন নিরাপদ হয়, চালনা হয় সচেতনভাবে, তাহলে জীবনও হবে নিরাপদ, প্রাণও বাঁচবে।

নিরাপদ মোটরযানের অর্থ শুধু যান্ত্রিক দিক থেকে ভালো অবস্থা বোঝায় না; এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে চালকের সতর্কতা, ট্রাফিক আইন মেনে চলা, সিটবেল্ট বা হেলমেট ব্যবহার, নিয়মিত গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা ও যাত্রীদের সচেতন আচরণ।

এটি কেবল ব্যক্তিগত সচেতনতায় থেমে থাকলে হবে না। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম এবং সরকার—সবাইকে নিয়ে একটি সম্মিলিত উদ্যোগই পারে এই বার্তাকে বাস্তবে রূপ দিতে।

প্রতিটি মোটরযান চালকের উচিত নিজের যানবাহনকে নিয়মিত পরীক্ষা করা, লাইসেন্সবিহীন চালনা থেকে বিরত থাকা, ও অন্যের জীবনের মূল্য উপলব্ধি করা। আর যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে—বেপরোয়া চালনা দেখলে প্রতিবাদ জানাতে হবে, ট্রাফিক আইন মানতে সবাইকে উৎসাহিত করতে হবে।

স্মরণ রাখতে হবে, একটি নিরাপদ মোটরযান শুধু একজন চালক নয়, তার পরিবার, পথচারী ও গোটা সমাজকে সুরক্ষা দেয়।

আমরা যদি প্রতিটি আবিরের মৃত্যু থেকে শিখি, তবে প্রতিটি ক্ষতি আমাদের জন্য এক নতুন আলোর দিশা হতে পারে। আমাদের ছোট ছোট পদক্ষেপ—যেমন হেলমেট পরা, জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার, ট্রাফিক আইন মেনে চলা—আজকের সমাজকে ভবিষ্যতের জন্য নিরাপদ করতে পারে।

আসুন, আবিরকে শুধু চোখের জলে নয়, বরং কাজের মাধ্যমে স্মরণ করি। এই সমাজে আর কোনো মা যেন সন্তান হারিয়ে না কাঁদে, আর কোনো স্বপ্ন যেন সড়কে থেমে না যায়—এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। এখন সবার মাঝে এই বার্তাটি ছড়িয়ে পড়ুক—“সেইফ মোটরযান, সেইফ লাইফ”।

Leave a Reply

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট